শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:২৪

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
ভোলার সেই লঞ্চ ট্রাজেডি আজও শিউরে উঠেন ভোলার মানুষ

ভোলার সেই লঞ্চ ট্রাজেডি আজও শিউরে উঠেন ভোলার মানুষ

dynamic-sidebar

আকতারুল ইসলাম আকাশ : আজ ৮ জুলাই। নাসরিন লঞ্চ দুর্ঘটনার ১৬ বছর। ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ঢাকা থেকে লালমোহনগামী এমভি নাসরিন-১ চাঁদপুরের ডাকাতিয়া এলাকায় প্রায় ২ হাজারের বেশি যাত্রীসহ ডুবে যায়। অতিরিক্ত যাত্রী ও মালবোঝাই করার কারণে মেঘনা নদীতে পানির তোড়ে লঞ্চটির তলা ফেটে যায়। ওই দিন প্রায় ৮ শতাধিক মানুষের সলিল সমাধি ঘটে।

দিনটি ভোলাবাসীর জন্য শোকাবহ দিন। ১৯৭০ এর প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের পর ভোলাবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় ভয়াবহ সংবাদ ছিল নাসরিন লঞ্চ ট্রাজেডি। অনেকে তার প্রিয়জনদের হারিয়েছেন এই দিনে। আর এর মধ্য দিয়েই ঘটে যায় লঞ্চ দুর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। এ সময় জীবিত মৃত সব মিলে ৪’শ যাত্রীর সন্ধান মিললেও প্রায় ৮’শ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। দুর্ঘটনার দুদিন পর থেকে ভোলার মেঘনা পরিণত হয়েছিল লাশের নদীতে। সেই ভয়ংকর দৃশ্য মনে করে এখনও শিউরে উঠে ভোলার মানুষ।

সে দিনের দুর্ঘটনায় নিহত ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের দরুন বাজার গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মোবারক হোসেনের স্ত্রী লুতফা বেগম জানান, স্বামী হারিয়ে গত ১৬ বছর তিনি ২ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কেউই তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। শুধু লুতফা বেগম নয় এমন অনেক পরিবার আছে সে দিনের দুর্ঘটনায় উপার্জনকারী স্বজন হারিয়ে দিন কাটছে নানা সমস্যার মধ্যে।

এক পরিবারের ২৬ জন নিয়ে বরযাত্রী হয়ে লঞ্চে উঠে ২৪ জনকেই হারায় লালমোহন ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের মহেষখালী গ্রামের রিনা বেগম। রিনার সঙ্গে বেঁচে আছে তার ফুফাতো ভাই সোহেল। কিন্তু চিরদিনের মত হারিয়ে ফেলে রিনার ৭ বছরের মেয়ে হাফসা, বোন স্বপ্না, রুমা, তাদের স্বামী-সন্তান, মামা আবদুল কাদের, মামি সুফিয়া, খালা রাহিমা, খালোত ভাই মিলন, মিজানসহ পুরো পরিবারের স্বজনদের। সে দিন রিনা ঢাকা থেকে ভাগ্নে কলেজ শিক্ষক মতিনের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য লালমোহনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলেন। পরিবারের কোন সদস্যেরই লাশ খুঁজে পায়নি রিনা। এখনো স্বজনদের ছবি বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছেন তিনি।

নাসরিন লঞ্চে সে দিন এশার নামাজের ইমামতি করেছিলেন লালমোহন চরভূতা ইউনিয়নের মাদ্রাসা সুপার মাও. মাকসুদুর রহমান। নিজে বেঁচে আসতে পারলেও সঙ্গে থাকা ভাগ্নে নোমানকে আর খুঁজে পাননি।

এত বড় দুর্ঘটনার পরও ভোলা-লালমোহন রুটে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজও নিরাপদ লঞ্চ দেয়া হয়নি। দুর্ঘটনার পরের সেই ফিটনেসবিহীন লঞ্চগুলো এখনো অবাধে চলছে ঢাকা-লালমোহন রুটে। এ কারণে ২০০৯ সালের ২৭ নভেম্বর আবারও দুর্ঘটনায় পড়ে কোকো-৪ লঞ্চটি। এ দুর্ঘটনায় ৮১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। বার বার এমন দুর্ঘটনা ঘটলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের টনক নড়ছে না। লালমোহন ও চরফ্যাশনের প্রায় ৮ লাখ মানুষ জীবন হাতে নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে যাতায়াত করে থাকে। মানুষ এসব লঞ্চে বাধ্য হয়ে উঠলেও ভীত সন্তস্ত্র থাকে।

এ ব্যাপারে লালমোহন পৌর মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন বলেন, লালমোহন বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ঢাকা-লালমোহন রুটে একাটি মানসম্পন্ন লঞ্চের। কিন্তু লঞ্চ মালিকদের উদাসীনতা ও খামখেয়ালীর কারণে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে এই পথে যাতায়াত করছে। এ ব্যাপারে তিনি কর্তৃপক্ষের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এদিকে, নাসরিন ট্রাজেডি উপলক্ষ্যে লালমোহন প্রেস ক্লাব, রিপোর্টারস ইউনিটি, নবমোহন ও গীতি চয়ন সংগঠনসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী, সাংস্কৃতিক সংগঠন মানববন্ধন ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net